অভিবাদনের বাইরেও: নারীর ক্ষমতায়নের জন্য প্রকৃত কাজ
প্রতিটি আন্তর্জাতিক নারী
দিবসে
বিশ্বটি অভিবাদন, আলোচনা
এবং
এই
নিয়ে
বিতর্কে ভরে
ওঠে
যে,
নারীদের জন্য
কি
সত্যিই
একটি
বিশেষ
দিন
প্রয়োজন। কিন্তু
এখানে
একটি
সত্য
রয়েছে:
নারীর
শুধু
অভিবাদনের প্রয়োজন নেই।
আমাদের
প্রয়োজন পদক্ষেপ। আমাদের
নিজেদের প্রতিটি অবস্থান থেকে,
সেটা
পরিবার,
কর্মস্থল বা
যেকোনো
প্রভাবশালী জায়গা
থেকে
পদক্ষেপ নিতে
হবে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৫: ব্যক্তিগত দায়িত্ব নেওয়ার সময় |
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৫: ব্যক্তিগত দায়িত্ব নেওয়ার সময়
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৫: লিঙ্গ বৈষম্যসহ, সব ধরনের নিপীড়ন, শোষণ এবং হয়রানি বন্ধ করার জন্য ব্যক্তিগত দায়িত্ব নেওয়ার সময়।সমতা
এবং
ক্ষমতায়ন নিয়ে
বিতর্ক
নয়,
বরং
আমাদের
নিজেদের থেকে
প্রশ্ন
করতে
হবে—আমরা আসলে কি
করছি?
শুধু
তত্ত্বে নয়,
খালি
প্রতিশ্রুতি দিয়ে
নয়,
বাস্তব
এবং
দৃশ্যমান উপায়ে,
আমাদের
ঘর,
কর্মস্থল এবং
সমাজে
আমরা
কি
করছি?
নিজেকে প্রশ্ন করা: আমরা কি সমস্যার অংশ?
নেতৃত্বের অবস্থানে থাকা নারীদের জন্য এটা আরও বড় দায়িত্ব। যখন আমরা ক্ষমতার অবস্থানে থাকি, আমরা কি অন্য নারীদের উঁচুতে তুলে ধরার জন্য সেই ক্ষমতা ব্যবহার করছি? না কি আমরা অজান্তেই পুরুষদের কাছ থেকে যে বৈষম্য ও পক্ষপাতিত্বের মুখোমুখি হয়েছিলাম, সেই একই ধারা পুনরাবৃত্তি করছি?যখন
একজন
নারী
যৌন
হয়রানির কথা
জানায়,
আমরা
কি
তার
পাশে
দাঁড়াচ্ছি, নাকি
তার
বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্ন
করছি?
আমরা
কি
তার
সুপারভাইজার কেন
তাকে
লক্ষ্যবস্তু করেছিল,
তা
প্রশ্ন
করছি,
নাকি
আসল
সমস্যা
সমাধানের চেষ্টা
করছি?
এই
ধরনের
অভিযোগগুলো উপেক্ষা বা
হালকাভাবে নেয়ার
মাধ্যমে, আমরা
কি
অপরাধীদের সমর্থন
করছি?
সমান বেতন, পদোন্নতি এবং সুযোগ: বাস্তব পদক্ষেপের সময়
যদি আমরা উচ্চ পদে আছি, আমাদের উচিত নিজেকে প্রশ্ন করা:- আমরা কি সমান কাজের জন্য সমান বেতন নিশ্চিত করছি?
- আমরা কি নারীকে কেবল তাদের যোগ্যতার
ভিত্তিতে পদোন্নতি এবং স্বীকৃতি দিচ্ছি, পক্ষপাতিত্বের ভিত্তিতে নয়?
- প্রতিভাবান
নারীরা কি বেতন বৃদ্ধি এবং নেতৃত্বের অবস্থানে উপেক্ষিত হচ্ছে? এই ছোট কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলি থেকেই পরিবর্তন শুরু হয়। নারী দিবসের দিন বক্তৃতা এবং সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে উদযাপন করা সহজ। কিন্তু প্রকৃত ক্ষমতায়ন তখনই ঘটে, যখন আমরা পদক্ষেপ নিই—যখন আমরা নীতি তৈরি করি, পক্ষপাতিত্বের বিরুদ্ধে লড়াই করি এবং প্রতিটি সিদ্ধান্তে ন্যায্যতা নিশ্চিত করি।
ক্ষমতা- এটি মূল সমস্যা
আসল সমস্যা শুধু পুরুষ বা নারী নয়—এটা ক্ষমতা। ক্ষমতার অধিকারীরা, পুরুষ হোক বা নারী, প্রায়ই দুর্বলদের শোষণ করে। বাস্তব পরিবর্তন আনার জন্য, আমাদের কাজের জায়গা এবং তার বাইরেও ক্ষমতা কিভাবে ব্যবহার হচ্ছে, তা পুনর্বিবেচনা করতে হবে। সব পুরুষ বৈষম্যকারী নয়, সব ব্যবস্থাপক হয়রানি করে না, সব স্বামী আধিপত্য বজায় রাখে না, সব পুরুষ শোষণ করে না। হাজার হাজার উদাহরণ রয়েছে এমন পুরুষের, যাদের ভালো মানবিক চরিত্র রয়েছে—ভালো পিতা, ভালো শিক্ষক, ভালো স্বামী, ভালো ভাই, ভালো বন্ধু, ভালো নেতা, ভালো ব্যবস্থাপক ইত্যাদি, যারা নারীর ক্ষমতায়ন জন্য কাজ করছেন এবং অনুপ্রাণিত করছেন। সকল ভালো মানুষ, যারা ভালো কাজ করছে, তাদের সম্মান জানানো এবং পুরস্কৃত করা উচিত। আমাদের প্রথম প্রয়োজন পারস্পরিক সম্মান।পারস্পরিক সম্মানের আহ্বান
ক্ষমতায়ন এক পক্ষে সুবিধা দেওয়া নয়, বরং এটি ন্যায্যতা নিয়ে কথা বলে। পুরুষ ও নারীর মধ্যে পারস্পরিক সম্মানই হলো একটি সুষম এবং ন্যায্য সমাজের চাবিকাঠি।তাহলে,
এই
আন্তর্জাতিক নারী
দিবসে,
আসুন
শুধু
অভিবাদন না
দিয়ে,
আমরা
প্রকৃত
পরিবর্তনের জন্য
প্রতিজ্ঞা করি।
কারণ
শুধুমাত্র পদক্ষেপ—শব্দ
নয়—আমাদের যে পৃথিবী
প্রয়োজন, সেটি
গড়ে
তুলতে
পারে।